বর্তমান Covid19 অতিমারির দাপটে যখন সারা বিশ্ব কাবু হয়ে আছে, ঠিক সেই মুহূর্তে গত বছরের ন্যায় এবার ও বঙ্গোপসাগরের উপর একটি প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়। এটি ঘূর্ণিঝড়ের রুপ ধারণ করে পশ্চিমবঙ্গীয় উপকূলবর্তী অঞ্চল এবং ওড়িশা উপকূলবর্তী অঞ্চলে আঘাত হানে। সেই সময় ভরা কোটাল থাকায় এবং ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর যৌথ প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গীয় উপকূলবর্তী অঞ্চলে প্রবল জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়। এর প্রভাবে অনেকাংশেই বাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে সমুদ্রের নোনা জল গ্রামের ভিতরে প্রবেশ করে ঘরবাড়ি ও কৃষি জমির প্রভূত ক্ষয়ক্ষতি করে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ওয়ারসি পরিবার (একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান) এর তরফে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের কর্মসূচী নেওয়া হয় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আক্রান্ত সুন্দরবন সংলগ্ন উত্তর চব্বিশ পরগণার েসুলকানি দ্বীপে। প্রায় ৫০৪ টি পরিবারের কাছে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে গত ৫ই জুন ওয়ারসি পরিবারের ২৮ সদস্যের একটি দল তিনটি লড়ি বোঝাই সামগ্রী নিয়ে সকাল সাতটার সময়ে প্রতিষ্ঠানের দোলতলা, মধ্যমগ্রামের প্রধান কার্যালয় থেকে যাত্রা শুরু করে। যেহেতু সুলকানি দ্বীপ প্রধান ভূখণ্ডের সাথে ব্রিজ দ্বারা সংযুক্ত নয় তাই হাসনাবাদ পর্যন্ত এসে তার পর নৌকায় ত্রাণ সামগ্রী বোঝাই করে সুলকানি পর্যন্ত যাত্রা করা হয়। যাত্রা পথেই ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবের প্রভাব বেশ ভালোই পরিলক্ষিত হয়েছে। যায়গায় যায়গায় বাঁধের ভগ্নদশা সেই সময়েও বর্তমান ছিল। কিছু কিছু যায়গায় প্রশাসনের দ্বারা বাঁধ মেরামতি চলছিল। এর মাঝে বাঁধের ভালো অংশের উপর ত্রিপল টাঙ্গিয়ে একটি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। স্থানীয় যুবকরাও ওয়ারসি পরিবারের সদস্যদের সাথে সমান তালে নৌকা থেকে ত্রাণ সামগ্রী নামাতে এবং সেই যায়গায় উপস্থিত হওয়া দুর্গত মানুষদের সামলাতে উদ্যোগী ভুমিকা গ্রহন করে। তাদের এই সকলের সমবেত ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়া প্রশংসাযোগ্য।
ত্রাণ সামগ্রী হিসাবে পরিবার পিছু মুড়ি, চিড়ে, গুড়, চিনি, বিস্কুট, চা এবং ছোটো বাচ্ছাদের খাওয়ার দুধের আয়জন করা হয়েছিল। এরই সাথে বর্তমান পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে ত্রাণ গ্রহনে উপস্থিত মানুষদের মাস্ক বিতরণ ও স্যানিটাইজার দিয়ে হাত স্যানিটাইজ ও করানো হয়েছে। সেই অস্থায়ী ক্যাম্প্যে প্রায় ২১৭ টি পরিবার কে ত্রাণ বিতরন করে গ্রামের ভিতরের দিকে আরো অন্য ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে গিয়েও ত্রাণ বিতরন করা হয়েছে। স্থানীয় যুবকদের এবং পরিবারের সদস্যদের সম্মিলিত প্রয়াসে সেই দিনের মধ্যেই সুষ্ঠ ভাবে প্রায় সমস্ত ত্রাণ বিতরন করা সম্ভব হয়েছিল।
“ আমি হিন্দু ও নই, মুসলিম ও নই, আমি একজন মানুষ। আমার কাজ মানুষকে ভালোবাসা। তোমরাও মানুষকে ভালোবাসো। কমজোর মানুষদের সাথে নিয়ে চলো। আমি খুশি থাকবো।”
পরম গুরু সরকার হাজি হাফিজ সৈয়দ ওয়ারিস আলি শাহ্ এর এই মতাদর্শে অনুপ্রানিত ওয়ারসি পরিবার যখনই প্রয়োজন পড়বে তখনই দুর্গত মানুষের সেবায় ঝাঁপিয়ে পড়বে।
#ইয়া_ওয়ারিস
